মানিকগঞ্জ সসরকারী দেবেন্দ্র কলেজের ইতিহাসঃ
মানিকগঞ্জ সসরকারী দেবেন্দ্র কলেজ ১৯৪২ সালে মানিকগঞ্জ জেলা সদরে ‘মানিকগঞ্জ কলেজ’নামে স্থাপিত হয়। মানিকগঞ্জ সসরকারী দেবেন্দ্র কলেজ বা মানিকগঞ্জ সরকারি মানিকগঞ্জ সসরকারী দেবেন্দ্র কলেজ মানিকগঞ্জ জেলা সদরে অবস্থিত একটি সরকারী কলেজ। তেরশ্রী জমিদার শ্রী সিদ্ধেশ্বরী প্রসাদ রায় এর পৃষ্ঠপোষকতায় তার প্রতিষ্ঠাকালীন বিশ বিঘা জমি ও নগদ দশ হাজার টাকা দানে এটি ১৯৪২ সালে মানিকগঞ্জ কলেজ নামে তেরশ্রী, ঘিওর অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৩ সালে মানিকগঞ্জে স্থানান্তর হয়। ১৯৪৩-৪৪ সালে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর নিবাসী বিখ্যাত দানবীর বায়বাহাদুর রণদ প্রসাদ সাহা ষাট হাজার টাকা নগদ ও অন্যান্য আর্থিক সাহায্য প্রদান করলে সেসময় তার পিতার নামানুসারে কলেজের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় মানিকগঞ্জ সসরকারী দেবেন্দ্র কলেজ।
সরকারি মানিকগঞ্জ সসরকারী দেবেন্দ্র কলেজ, মানিকগঞ্জ
কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তৎকালীন জমিদার শ্রী সিদ্ধেশ্বরী প্রসাদ রায় চৌধুরীর এবং কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন শ্রী হিমাংশুভূষণ সরকার। ১৯৪৩-৪৪ সালে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর নিবাসী বিখ্যাত দানবীর বায়বাহাদুর রণদ প্রসাদ সাহা ষাট হাজার টাকা নগদ ও অন্যান্য আর্থিক সাহায্য প্রদান করলে সেসময় তার পিতার নামানুসারে কলেজের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় মানিকগঞ্জ সসরকারী দেবেন্দ্র কলেজ।[৩] ১৯৪৯ সালে ডিগ্রী কলেজ হিসেবে উন্নীত হয়। ১৯৬৩ সালে উচ্চ মাধ্যমিক বিজ্ঞান। ১৯৬৪ সালে ডিগ্রী বাণিজ্য কোর্স চালু হয়। ১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে ডিগ্রী বিজ্ঞান কোর্স চালুর ফলে পূর্ণাঙ্গ ডিগ্রী কলেজে উন্নীত হয়। ১৯৭২ সালে বাংলা সম্মান কোর্স শুরু হয়। ১৯৭৬ সালে উচ্চ মাধ্যমিক কৃষি কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৮০ সালের ১ মার্চ সরকারীকরণ করা হলে কলেজের নাম হয় 'সরকারি মানিকগঞ্জ সসরকারী দেবেন্দ্র কলেজ, মানিকগঞ্জ'।
অবকাঠামো
কলেজটি ২৩.৭৯ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। কলেজে শুরু থেকেই ছাত্রদের জন্য আবাসিক ব্যবস্থা ছিলো। মূল ভবনঃ ১ টি অন্যান্য ভবনঃ ৪ টি অধ্যক্ষের বাসভবনঃ ১ টি শিক্ষক ডর্মিমিটরিঃ ১ টি ছাত্রাবাসঃ ২ টি ছাত্রীনিবাসঃ ১ টি মসজিদঃ ১ টি সাইকেল স্ট্যান্ডঃ ১ টি পরিবহন স্ট্যান্ডঃ ১ টি শহীদ মিনারঃ ১ টি দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা চত্বরঃ ১ টি
পঠিত বিষয়
বর্তমানে কলেজে ঢাকা শিক্ষাবোর্ড এর অধীনে উচ্চ মাধ্যমিক এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এর অধীনে স্নাতক (পাশ), ১৭ টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান), ১৪ টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু আছে।
মানিকগঞ্জ সসরকারী দেবেন্দ্র কলেজ, মানিকগঞ্জ
১৯৪৪ সালে এই কলেজের নাম পরিবর্তন করা হয়। টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রণদা প্রসাদ সাহা-র পিতার নামে কলেজের নামকরণ করা হয় মানিকগঞ্জ সসরকারী দেবেন্দ্র কলেজ, মানিকগঞ্জ। ১৯৪৭ সালে কলেজে স্নাতক শ্রেণি চালু করা হয়, ১৯৬৩ সালে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে বিজ্ঞান এবং ১৯৬৪ সালে স্নাতক শ্রেণিতে বাণিজ্য বিভাগ চালু করা হয়।
১৯৭০ সালে এ কলেজে বি.এসসি কোর্স চালু করা হয়, ১৯৭১-৭২ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক সম্মান চালু করা হয়। ১৯৭৬-৭৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে কৃষি বিজ্ঞানে পাঠদান শুরু হয়। ১৯৮০ সালের ১ মার্চ কলেজটি সরকারিকরণ করা হয়। তখন থেকে কলেজের নাম হয় সরকারি মানিকগঞ্জ সসরকারী দেবেন্দ্র কলেজ। কলেজটিতে ১৯৮৯-৯০ শিক্ষাবর্ষ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক সম্মান এবং অর্থনীতি, দর্শন, ইতিহাস, ব্যবস্থাপনা ও গণিত বিষয়ে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে পাঠদান শুরু হয়।
কলেজটি ২৩.৭৯ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই কলেজের ছাত্রাবাস ছিল। ১৯৭৫ এবং ১৯৮৮ সালে ছাত্রাবাসের কিছুটা সংস্কার ও সম্প্রসারণ ঘটে। ১৯৯৩ সালে পুরাতন বিল্ডিং ভেঙ্গে নির্মাণ করা হয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান ভবন। ১৯৯৪ সালে নির্মাণ করা হয় দোতলা একাডেমিক ভবন। ২০০১ সালে কলেজের জন্য একটি নতুন তিনতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে কলেজটিতে ৪টি একাডেমিক ভবন, ৩টি ছাত্রাবাস, ১টি খেলার মাঠ ও ২টি পুকুর রয়েছে।
বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক (পাশ), ১৫টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান), ৭টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ১ম পর্ব ও ৮টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর শেষপর্ব কোর্স চালু আছে।
অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার এবং শিক্ষকশিক্ষিকার সংখ্যা ৭৯। ফলাফল, শিক্ষার মান এবং শিক্ষানুকূল পরিবেশের কারণে ২০০০ সালে কলেজটি জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ কলেজ নির্বাচিত হয়েছে।
পড়ালেখার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা, বিতর্ক, রেডক্রিসেন্ট, বিএনসিসি, রোভার, গার্ল-ইন-রোভারসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। ১৯৪২ সালে কলেজ কর্তৃপক্ষ উর্বশী নামে একটি ম্যাগাজিন প্রকাশ শুরু করে এবং ১৯৫০ সাল পর্যন্ত তা নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হতো। পরবর্তীকালে বার্ষিক স্মরণিকা, রূপায়ণ এবং আবহমান নামে ৩টি ম্যাগাজিন নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হচ্ছে।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহীদ রফিক ছিলেন একসময় এ কলেজের ছাত্র। শহীদ রফিকের মায়ের কবর এ কলেজ প্রাঙ্গণে অবস্থিত। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এ কলেজের ছাত্র আবুল কাশেম খান, গোলাম কিবরিয়া তজু, আব্দুস সাত্তার (পিন্কু), আবুল হোসেন, রতন চন্দ্র বিশ্বাস, আনছার আলী, মোঃ কফিল উদ্দিন, বিমান বিহারী সাহা প্রাণ দিয়েছেন।
তথ্যসূত্র:
0 coment rios: